ইউনূস-টিউলিপের সাক্ষাতের বিষয়ে যা বললেন হান্নান মাসউদ
আপলোড সময় :
১০-০৬-২০২৫ ০১:০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন
আপডেট সময় :
১০-০৬-২০২৫ ০১:০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এসনিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন যে, ‘প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও টিউলিপ সিদ্দিকীর মধ্যে কোনো বৈঠক হলে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে প্রতারণা করা হবে।’
সোমবার (৯ জুন) বিকেলে হাতিয়ার চরঈশ্বর ইউনিয়নের পর্যটন কেন্দ্র কমলার দিঘীর পাড়ে ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ডাম্পিং কার্যক্রমের উদ্বোধনের আগে স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা শুনেছি ড. ইউনূস স্যার ইউরোপ যাচ্ছেন। তার সঙ্গে নাকি শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকী দেখা করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এই টিউলিপ সিদ্দিকী কে? শেখ রেহানার মেয়ে। যার সরাসরি ইন্ধনে এদেশের ছাত্র জনতাকে হত্যা করা হয়েছে। এই টিউলিপ সিদ্দিকী কে? যে এদেশের রাশিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি করার সময় বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেছে। তার বিরুদ্ধে ব্রিটিশ সরকার তদন্ত করছে। তার দুর্নীতির কারণে সরকারের মন্ত্রী পরিষদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ করে তিনি বলেন, “টিউলিপ সিদ্দিকী ছাত্র জনতার খুনি, খুনের সঙ্গে জড়িত। এদেশের মানুষের অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত টিউলিপ সিদ্দিকী। দুর্নীতির কারণে মন্ত্রীত্ব হারানো টিউলিপ সিদ্দিকীর ডাকে আপনি সাড়া দিবেন না। তার সঙ্গে সাক্ষাৎ দেবেন না। আমরা মনে করি টিউলিপ সিদ্দিকীর সাথে সাক্ষাৎ করা মানে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে প্রতারণা করা। আমরা ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্যারের ওপর ভরসা রাখি। আমরা আশা রাখি টিউলিপ সিদ্দিকীর সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্যারের কোনো বৈঠক হবে না ইনশাআল্লাহ।”
যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ‘১৯৭১ সালের পর সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া স্বাধীন হয়েছে। মালয়েশিয়া পেয়েছিল মাহাথির মোহাম্মদের মতো সৎ ও নিষ্ঠাবান শাসক। আর আমরা পেয়েছি শেখ মুজিবের মতো শাসক যার আমলে এদেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল।’
বাংলাদেশের ওপর ভারতের আগ্রাসী মনোভাবের কথা উল্লেখ করে হান্নান মাসউদ বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বিভিন্ন সময়ে অনেক শাসকের পরিবর্তন হয়েছে। তার মধ্যে কেবল মেজর জিয়া এদেশকে প্রকৃত পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখেছেন। ভারতের আগ্রাসী মনোভাব আমাদের মেজর জিয়াকে বাঁচতে দেয়নি। শেখ হাসিনার পতন এদেশে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের পতন নয়, শেখ হাসিনার পতন মানে এদেশে ভারতীয় আধিপত্যের পতন।’
গণঅভ্যুত্থানে দু’হাজার জীবন দিয়েছে শুধু নির্বাচনের জন্য নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আপনারা নির্বাচন-নির্বাচন করছেন। ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন। এদেশে নির্বাচন হবে, তবে তার আগে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। এদেশের সকল ঘর থেকে অস্ত্র উদ্ধার হলে, প্রতিটি অস্ত্রধারী গ্রেফতার হলেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে।”
এ সময় তার জন্মভূমি হাতিয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, “অনেকে আমার কাছে জানতে চায় আমি জাতীয় পর্যায়ে রাজনীতি করেও কেন হাতিয়া নিয়ে ভাবছি। আমি তাদেরকে বলি, হাতিয়ার মানুষের দুঃখ, দুর্দশার ভাগাভাগি করতে হাতিয়া যাচ্ছি। দীর্ঘ সময় থেকে হাতিয়া সন্ত্রাসের আখড়ায় রূপ নিয়েছিল। সেই সন্ত্রাসের আখড়া থেকে হাতিয়াকে বসবাসযোগ্য হাতিয়ার রূপ দেয়ার জন্য আমি হাতিয়া নিয়ে ভাবছি।”
তিনি আরও বলেন, “হাতিয়ার মানুষ আমার ভাই। এখানে সবাই মিলেমিশে বসবাস করেছে। গত এক বছরে আমাদের এ বন্ধন নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে। এখন সময় এসেছে সেই বন্ধন আমাদের দৃঢ় করার। ভাইয়ে ভাইয়ে, প্রতিবেশী প্রতিবেশী বন্ধন দৃঢ় করতে। এখান থেকে দ্বীপ হাতিয়া বাংলাদেশের বুকে মাথা উচু করে দাঁড়াবে।”
হাতিয়া কলেজের সাবেক শিক্ষক মফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন- জিও ব্যাগ ডাম্পিং করার কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিবর্গসহ হাতিয়া উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ।
নিউজটি আপডেট করেছেন : mainadmin
কমেন্ট বক্স